জম্বি সম্বন্ধে আপনাদের ধারনা আছে হয়তো অনেকের । জম্বি মানে ধরুন আমাদের সহজ বাংলাতে আপনি জানেন একজন মানুষ মারা গেছে , হঠাৎ আপনি বেশ কিছুদিন পর দেখলেন সেই মানুষটি জীবিত অবস্থাতে কোথাও ঘুরে বেড়াচ্ছে ।এটা এমন ভাবে হতে পারে যে , বেশ খানিকটা দুরত্বের আপনি আপনার কোন বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছেন ।বেড়াতে গিয়ে আপনি দেখলেন যে আপনাদের গ্রামে যে লোকটি মারা গিয়েছিলো সেই লোকটি এখানে মাঠে দিব্যি কাজ করে যাচ্ছে ।আপনাকে দেখে তার কোন ভাববোধ হলোনা।সে তার মত আপন মনে কাজ করে যাচ্ছে ।আপনি তো বেশ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে গেলেন । এই ভেবে যে কদিন আগে আনোয়ার কে মারা যেতে দেখলাম , ওর জানাযাতে শরিক হলাম , দিব্যি হাজার মানুষের উপস্থিতিতে ওকে দাফন করে এলাম , এতদিন তো ওর পচে হাড় থেকে মাংশ আলাদা হয়ে যাবার কথা । দিব্যি শালা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে ৫০ মাইল দুরের এই গ্রামে এসে ।এটা কিভাবে সম্ভব !এরকম কিছু হলেই সেই মৃত থেকে জীবিত অবস্থাতে ফিরে আসা লোকটিকে জম্বি বলা হয় ।এরকম কিছু হয়েছিল আফ্রিকান সেই যুবকটির ক্ষেত্রে । যুবকটির তার ভাই এর সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল ।সেই বিরোধের সুত্র ধরে ওই যুবকের ভাই বোকোর (বোকোর বলতে আফ্রিকান ভাষাতে তান্ত্রিক কে বোঝানো হয়)এর কাছ থেকে বিষ নিয়ে আসে ।সেই বিষ খাবারের সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয় ।ফলে ওই যুবকটির মৃত্যু ঘটে ।অকালে যুবক বয়সে মারা যাবার কারনে তার পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।এরপরের ঘটনা আরও চমকপ্রদ ।ওই যুবকটি নিজেকে আবিষ্কার করে একদিন এক মেলাতে ।তারপর তার মনে পড়ে যায় মারা যাবার কথা , বাড়ীর কথা সবকিছু। কিন্তু এখানে কিভাবে এলো বুঝে ওঠার আগে দেখে শ্বেত চামড়ার কয়েকজন লোক এসে তাদের কে একটা ফার্ম হাউসে নিয়ে গেলো ।সেখানে তাদের কে অমানুষিক খাটা খাটুনি করান হতো আখের ক্ষেতে ।শরীরে কষ্ট সহ্য না হওয়াতে সে সহ আর কয়েকজন পালিয়ে এলো ।
(২৬৯)
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগছে এটা কিভাবে সম্ভব। এরকম গাঁজাখুরি গল্প না বললেই হতোনা ।কিন্তু মুল ঘটনাটা বিজ্ঞানীদের মতে এমন যে , আফ্রিকাতে বনে জঙ্গলে এক বিশেষ প্রজাতির শসা পাওয়া যায় ।এই শসার দুই মাথাতে পাওয়া যায় এক বিশেষ প্রকারের বিষ ।আপনারা খেয়াল করে দেখবেন আমরা যখন বাসাবাড়িতে বা কোথাও শসা খেলে শসার দুই মাথা কেটে ফেলা হয়। তারপর ছিলে খাওয়া হয়।আফ্রিকান বিশেষ জাতের ওই শসাতে থাকে এক প্রকার সাংঘাতিক মারাত্মক বিষ।এই বিষের বিশেষত্ব হল এটি মানুষের হৃদস্পন্দন ও শ্বাস-প্রশ্বাস এতটা ধীর করে দেয় এবং অজ্ঞান করে দেয় যে আপাতদৃষ্টিতে খালি চোখে সেই মানুষটি কে মৃত ভেবে ভুল করে তার আত্বীয় স্বজন এবং তাকে দাফন করে দেয় । এই বিষের ক্রিয়াতে মানুষটি বলতে গেলে খুব কম অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে।ফলে কবরের বন্দি যায়গাতেও তার শ্বাস প্রশ্বাস চালু থাকে ।বিষের ক্রিয়া শেষ হবার আগেই লোকটিকে সেই যাদুকরের(বোকোর) দল লাশ উত্তোলন করে নিয়ে আসে ।এতক্ষন কম অক্সিজেন এ বেঁচে থাকবার কারনে লোকটির মস্তিষ্কের উপর যে একটা চাপ পড়ে, সে কারনে সে তার পূর্বের অনেক স্মৃতি হারিয়ে ফেলে ।বলতে গেলে স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলে ।তখন ওই লোকটিকে দিয়ে দশজনের পরিশ্রম একা করানোর সাথে সাথে যে কোন অপরাধ ও নির্দ্বিধায় করানো সম্ভব ।কিন্তু এই যাদু বিষ এর একটা দুর্বলতা আছে ।সেটা হলো আক্রান্ত বাক্তি যদি কখনো লবন খেয়ে ফেলে তবে তার উপর থেকে বিষ এর প্রভাব কেটে যাবে । ওই যুবকটির ক্ষেত্রে হয়েছিল এমন কাজ।ওই যে কাজের ছুটির ফাকে মেলাতে গিয়ে নোনতা বিস্কুট খেয়েছিল তারা কয়েকজন ।আর সেই বিস্কুট এর লবন তাদের কে বিষের প্রভাব কাটিয়ে স্মৃতি শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছিল ।আপাতদৃষ্টিতে এটা যাদু মনে হলেও এটার পিছনে কত বড় বিজ্ঞান কাজ করছে সেটা কি বুঝতে পেরেছেন ?।এগুলো প্রযুক্তি জিনিস টা এমন যে মানব সমাজে প্রযুক্তি এই এখন আমরা যেমন দেখছি মানে এখন আমরা নিজেদের যেমন অতি আধুনিক মনে করছি তেমন টা কিন্তু নয়। কি বিস্মিত হলেন তাইনা, পাগল ও বলতে পারেন আমাকে।
(২৭০)
1 ping
[…] কালোজাদু-পৃষ্ঠা-২৬৯+২৭০ […]